রপ্তানি শুল্ক নিয়ে মিত্র দেশ ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান টানাপোড়েন একসময় কেটে যাবে এবং ‘দিনের শেষে’ উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ফের পুরোনো ছন্দে ফিরবে বলে আশা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারিমন্ত্রী এবং ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা স্কট বেসেন্ট এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার মার্কিন সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ, আর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি। আমি মনে করি, দিনের শেষে সব ঠিক হয়ে যাবে এবং আমরা আবার পুরোনো ছন্দে ফিরে যেতে পারবো।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর ধার্য রপ্তানি শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে ’২৫ সালের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেন ট্রাম্প। পরে মার্চ মাসে শুল্কের হার ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করেন তিনি।
গত এপ্রিলে জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে সংঘাতে জড়ায় ভারত ও পাকিস্তান। প্রায় চার দিন সংঘাত চলার পর যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ। যুদ্ধবিরতির জন্য পরে পাকিস্তান ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিলেও ভারত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তার অবদান স্বীকার করেনি।
এই নিয়ে দুই মাস ধরে টানাপোড়েন চলার পর আগস্টের শুরুর দিকে ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প; ফলে মোট ধার্যকৃত শুল্ক বেড়ে পৌঁছেছে ৫০ শতাংশে। গতকাল বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে কার্যকর হয়েছে এই শুল্ক।
যদিও অতিরিক্ত এই শুল্ক জারির কারণ হিসেব ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ভারত রুশ জ্বালানি তেল ক্রয়ের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করছে। তবে ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করছে। ট্রাম্পের এই অতিরিক্ত শুল্কের জেরে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের কমপক্ষে ৪৫ হাজার কোটি ডলারের লোকসান গুণতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৭ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৪ বার টেলিফোন করেছেন ট্রাম্প, কিন্তু কোনোবারই ফোন ধরেননি মোদি। ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্কট বেসেন্ট স্বীকার করেছেন যে সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির সম্পর্কে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মোদি সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক খুবই ভালো। এখন এতে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে, তবে আমরা আশা করছি যে এক সময় এটি কেটে যাবে।’
আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শুধু রাশিয়ার তেল কেনার জন্যই ভারতের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক জারি করা হয়েছে— এমন নয়। ভারতের সঙ্গে আমাদের বড় আকারের বাণিজ্য ঘাটতি থাকায় শুল্ক আরোপ ছাড়া এই ঘাটতি পূরণের উপায় ছিলো না।’
সূত্র: ফক্স নিউজ, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
ইউটি/টিএ