মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে সাত বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলন হবে। সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অংশ নেবেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সাত বছরের বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন। ২০২০ সালে ভারত-চীনের প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর দুই প্রতিবেশী দেশ উত্তেজনা কমাতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে। এই সফরকে সেটি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত বছর রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী একই মঞ্চে মুখোমুখি হয়েছিলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা তন্ময় লালকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, এসসিও সম্মেলনে ভারতের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, সংযোগ, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা।
এনডিটিভি বলছে, নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে পাঁচ বছর ধরে চলা সীমান্ত উত্তেজনার পর সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের শীর্ষ কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতের ওপর নতুন করে শুল্কারোপের বিষয়টিও নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র বলছে, এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও আয়োজন করা হয়েছে।
এসসিও সম্মেলন ২০২৫
আগামী রোববার (৩১ আগস্ট) থেকে চীনের বন্দর শহর তিয়ানজ়িনে ‘সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা’ বা এসসিও সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশের সরকার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন। বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশকিছু নেতা যোগ দেবেন।
গত সপ্তাহে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এবারের এসসিও সম্মেলনটি ২০০১ সালে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তিনি একে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন ধারা নির্মাণে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
নিরাপত্তা-কেন্দ্রিক এই জোটটি প্রথমে ছয়টি ইউরেশীয় দেশের অংশগ্রহণে গঠিত হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি প্রসারিত হয়ে ১০টি স্থায়ী সদস্য এবং ১৬টি সংলাপ ও পর্যবেক্ষক দেশের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহৎ জোটে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার বাইরে সম্প্রসারিত হয়ে সম্প্রতি অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতার দিকেও অগ্রসর হয়েছে এসসিওর কার্যক্রম।
ইএ/টিকে