বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, ‘যারা বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় মাপতে চায়, তাদের দাঁড়িপাল্লায় সমস্যা আছে, তাদের ঈমানে সমস্যা আছে।’
শনিবার ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা ইউনিয়নের দড়িনগুয়া কান্দাপাড়া গ্রামে কাঠের সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি সেতুর নিচে গভীর খাদে মাটি ভরাট করতে উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। পরে তিনি গ্রামবাসীর সঙ্গে হেঁটে সেতু পার হন।পরে মুনাজাত করা হয়।
দীর্ঘদিন যাবৎ দড়িনগুয়া কান্দাপাড়া থেকে হালুয়াঘাট প্রধান সড়কে ওঠার গ্রামীণ রস্তায় বিরাট খাদ সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের যাতায়াতের বিঘ্ন ঘটায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা এমরান সালেহ প্রিন্সের অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘বিএনপি সরকার বা বিরোধী দলে যে অবস্থানেই থাকুক না কেন, বিপদে-আপদে জনগণের পাশে থাকে। মানবতার কল্যাণে বিএনপি কাজ করে। দুর্নীতি, লুটপাট, দমন-নিপীড়ন চালিয়ে জনগণের অধিকার হরণ করে গণশত্রুতে পরিণত হয়ে গণ-হত্যাকারী আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেছে। পালাতক আওয়ামী লীগ আর রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাস্তা-ব্রিজ, এমনকি মসজিদ-কবরস্থানের উন্নয়নের নামে বরাদ্দকৃত টাকা লুটপাট করে নিজেদের পকেট ভর্তি করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা নিজেদের টাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা-ব্রিজ, মসজিদ-কবরস্থানসহ অবকাঠামো উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করে।
এখানেই বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য।’ তিনি বলেন, ‘পবিত্র ধর্ম ইসলামকে রাজনীতিতে টেনে আনা ইসলামের লেবাসধারী কয়েকটি দল ইদানীং নৌকার সঙ্গে ধানের শীষকে এক করে বিষ বানিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। চরম মিথ্যাচার করে এরা রাজনীতিকে কুলষিত করছে।’
তিনি বলেন, ‘ধানের শীষ উন্নয়ন, উৎপাদন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবিকতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, নীতি-নৈতিকতার প্রতীক। নৌকা দুর্নীতি, লুটপাট, ফ্যসিবাদ, অবিচার, দমন-নিপীড়ন, অমানবিকতা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীক। যারা বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে এক পাল্লায় মাপতে চায়, তাদের দাঁড়িপাল্লায় সমস্যা আছে, তাদের ঈমানে সমস্যা আছে। তারা রাজনীতির প্রয়োজনে আল্লাহর নাম ব্যবহার করে। আবার নিজেদের মধ্যপন্থী পরিচয় দিতে গিয়ে আল্লাহর নাম সরিয়ে দিতেও দ্বিধা করে না। ধর্মপ্রাণ মুসলামনদের কাছে গিয়ে ইসলামী শরিয়াহ আইনের কথা বলে। আবার আধিপত্যবাদী শক্তির করুণা ভিক্ষায় শরিয়াহ আইনের বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো এসব দলের বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচি নাই। বিএনপি কারো বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে না। সত্য কথা তুলে ধরে। দেশ ও জনকল্যাণে বিএনপির যুগন্তকারী কর্মসূচি আছে।’
তিনি বলেন, “বিএনপি জনগণের রায়ে ক্ষমতায় এলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির আগামী সরকার প্রান্তিক কৃষককে ‘ফার্মার্স কার্ড’র মাধ্যমে ফসল উৎপাদনে সার্বিক সহযোগিতা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। প্রতিটি পরিবারের মা বা গৃহকর্ত্রীর নামে ‘ফ্যামিলি কার্ডে’র মাধ্যমে পরিবারের খাদ্য দ্রব্যের একাংশ বিনা মূল্যে প্রদান করবে। সরকার গঠনের প্রথম ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি নতুন কর্মসংস্থান, শিক্ষিত বেকারদের এক বছরের জন্য বেকার ভাতা, প্রতি উপজেলায় কল কারখানা স্থাপন করে বেকারদের কর্মসংস্থান, এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য, বিনা চিকিৎসায় কারো মৃত্যু নয়’ এই নীতির আলোকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।”
তিনি বলেন, “বিএনপির বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্তৃক সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ সংযোজন করে আওয়ামী আমলে প্রণীত রাষ্ট্রের চার মূলনীতিতে জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী পরিবর্তন এনে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তন এনে ‘ধর্মীই মূল্যবোধ’ ও ‘সর্ব শক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ প্রতিস্থাপন করেছিলেন।”
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি ইসলামী মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং ইসলামী রীতি, নীতি ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। কেউ নিলে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ করা হবে।’ তিনি মহল বিশেষের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে গ্রামবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
এসএস/টিএ