ছবি: সংগৃহীত
চাপের মুখে অবশেষে সুর নরমে বাধ্য হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাতিল হয়ে যাওয়া কয়েক হাজার বিদেশি পড়ুয়ার ভিসা ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিল তাঁর প্রশাসন।
অভিযোগ, গাজ়ার পাশে দাঁড়িয়ে বিদেশি পড়ুয়াদের ক্যাম্পাস-বিরোধিতা একেবারেই সহ্য হয়নি ডনের। আর তার জেরেই একের পর এক বিদেশি পড়ুয়ার ভিসা প্রত্যাহার করা শুরু করে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। এমনকী, বহু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিভার্সিটিকে না জানিয়েই! শুধু তাই নয়, ট্র্যাফিক-আইন ভাঙার মতো ছোটখাটো অপরাধে শাস্তির খাঁড়া নেমেছিল বহু বিদেশি পড়ুয়ার উপরে। প্রশ্ন উঠেছিল, 'মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন' স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প কি তা হলে ক্যাম্পাস থেকে বিদেশি তাড়াতে মরিয়া?
সে পথে হাঁটতে হাঁটতেই আচমকাই ইউ টার্ন নিলেন খোদ ট্রাম্প। শুক্রবারের খবর— কয়েক হাজার বিদেশি পড়ুয়ার বাতিল হয়ে যাওয়া ভিসা ফের রেজিস্ট্রেশনে সায় দিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। যার নেপথ্যে ঘরে-বাইরে তৈরি হওয়া চাপ রয়েছে বলেই মনে করছেন িবশেষজ্ঞদের একাংশ। ট্রাম্পের ভিসা-বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় একশোরও বেশি মামলা হয়েছিল অন্তত ২৩টি স্টেট থেকে। ওয়াকিবহালের মতে, মামলা-চাপেই ঢোঁক গিলতে বাধ্য হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বস্টনের একটি ফেডেরাল কোর্টে শুনানির পরে নয়া সিদ্ধান্তের কথা জানায় ট্রাম্প সরকার।
কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে 'আন্দোলন' করার জন্য শুধু মার্চেই ৩২৭ জন বিদেশি পড়ুয়ার এফ-১ ভিসা খারিজ করেছে আমেরিকা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সম্প্রতিই সেই তালিকার উল্লেখ করে দাবি করেন, ট্রাম্পের সরকার যে পড়ুয়াদের নিশানা করেছে, তাঁদের ৫০ শতাংশই ভারতীয়। ক্যাম্পাসে ইজ়রায়েল-বিরোধিতার কারণে ওই ৩২৭ জন পড়ুয়াকে 'রাষ্ট্রদ্রোহী' তকমাও দেওয়া হয়। ফলে তাঁরা আর কখনও আমেরিকায় যেতে পারবেন না! এই মর্মে জারি করা 'আমেরিকান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন'-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জয়রাম লেখেন, 'ভিসা বাতিলের কারণগুলি অস্পষ্ট এবং অস্বচ্ছ। তাই এটি ভারতীয়দের কাছে এটি উদ্বেগ এবং আশঙ্কার কারণ।' এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার কেন চুপ, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, ট্রাম্পের এ ভাবে ইউ টার্ন নেওয়ার পিছনে কূটনৈতিক চাপ থাকতেই পারে।
এর মধ্যে আবার ট্যারিফ-যুদ্ধ শুরু করেও চাপের মুখে ট্রাম্প প্রশাসন। বিদেশি পণ্য আমদানির উপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষিত বর্ধিত শুল্ক বন্ধ করতে মামলা করেছে অন্তত ১২টি স্টেট। মামলায় বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই শুল্ক আরোপ করেছেন। ফলে এটি আইনত অবৈধ। কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের শুল্ক আরোপ করার অধিকার তার নেই। এ নিয়ে ট্রাম্পের ট্যারিফ আরোপের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে।
আরআর/এসএন