ভারতীয় সিনেমা জগতে তারকারা প্রায়শই আলোচনায় থাকেন গ্ল্যামার, ব্লকবাস্টার অথবা রোমাঞ্চকর চরিত্রের জন্য। তবে কখনও কখনও কিছু ঘটনা আমাদের চোখে এনে দেয় এক নতুন নায়ককে-যিনি কেবল রুপালি পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও হয়ে ওঠেন এক সাহসী, সহানুভূতিশীল মানুষ। ঠিক তেমনই উদাহরণ তৈরি করলেন প্রভাস।
টলিউডের বর্ষীয়ান কমেডিয়ান ফিশ ভেঙ্কট আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। দীর্ঘ নয় মাস ধরে তিনি কিডনি সমস্যায় ভুগছেন, প্রতিনিয়ত ডায়ালিসিসে থাকতে হচ্ছে তাকে। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে সম্প্রতি, তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই অস্ত্রোপচারের খরচ অতিক্রম করবে ৫০ লক্ষ রুপি।
এই সময়ে, অভিনেতার মেয়ে শ্রাবন্তী যখন জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আর্থিক সহায়তার করুণ আবেদন জানাচ্ছেন, তখন খবরটি পৌঁছে যায় প্রভাসের কানে। এক মুহূর্ত দেরি না করে তিনি নিজেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহনের দায়িত্ব নেন। প্রভাসের টিম সোজা বলে দেয়-দাতা খুঁজে পান, বাকি দায়িত্ব আমাদের।
এই উদারতার খবরে যেমন ফিশ ভেঙ্কটের পরিবার কৃতজ্ঞতায় বিহ্বল, তেমনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীদের মধ্যে উঠেছে প্রশংসার ঝড়। বহু নির্মাতা, অভিনেতা, দর্শক প্রভাসকে বলছেন বাস্তব জীবনের “ডার্লিং”। একদিকে যখন টলিউডের এক প্রজন্মের কমেডি আইকন জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে, তখন তাঁর পাশে এসে দাঁড়ালেন আরেক প্রজন্মের প্যান-ইন্ডিয়া তারকা।
প্রভাস পূর্বেও এমন নিঃশব্দ মানবিকতার উদাহরণ রেখেছেন-কখনও টেকনিশিয়ানদের সহায়তা, কখনও বা অসুস্থ কলাকুশলীদের পাশে থেকে। তবে ফিশ ভেঙ্কটের ঘটনায় তা যেন এক অনন্য মাত্রা পেল।
এখনও একজন কিডনি দাতার খোঁজ চলছে। ভেঙ্কটের পরিবার খোলা আবেদন রেখেছে-যদি কারও ব্লাড গ্রুপ মিলে যায়, তবে অনুগ্রহ করে এগিয়ে আসুন।
এই সময়ে আমাদের মনে পড়িয়ে দেয়, একজন তারকার আসল পরিচয় শুধু তার চরিত্রে নয়, তার কর্মে। প্রভাসের এই উদ্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়-গ্ল্যামারের বাইরেও তারকারা মানুষ, এবং তারাই সত্যিকারের নায়ক হতে পারেন।
টিকে/