ভারতের তিন প্রধান চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি—টলিউড, কলিউড ও বলিউড—চরম সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সিনেমা হল ফাঁকা, বড় তারকাদের ছবি মুখ থুবড়ে পড়ছে, প্রযোজকেরা লোকসানের ভয়ে পিছু হটছেন। গ্রীষ্মকাল সাধারণত ব্লকবাস্টারের মৌসুম হলেও এবার যেন চারপাশে শুধুই হতাশা। এই পটভূমিতে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে একটি দিন—আগামী ১ মে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির চিত্র ছিল প্রায় শোচনীয়। টলিউডে ‘অর্জুন সন অব ব্যজয়ন্তি’ কিংবা ‘ওডেলা ২’ আশানুরূপ করতে পারেনি। কলিউডে ‘কঙ্গুয়া’র পর সুরিয়ার জনপ্রিয়তা বেশ কমে এসেছে।
বলিউডে ‘ছাভা’ ছাড়া আর কোনো ছবিই দর্শকদের হলে টানতে পারেনি। ‘কেসারি ২’ কিংবা ‘সিকান্দার’ও ব্যর্থ।
এই প্রেক্ষাপটে তিনটি বড় বাজেটের ছবি একই দিনে মুক্তি পেতে যাচ্ছে—টলিউডের ‘হিট ৩’, কলিউডের ‘রেট্রো’ ও বলিউডের ‘রেইড ২’। ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে-বাইরে সকলের দৃষ্টি এখন এই তিন ছবির দিকে।
নানির ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই ‘হিট ৩’-এ
তেলুগু তারকা নানি এবার একেবারে নতুন চেহারায় হাজির হচ্ছেন ‘হিট ৩’-এ। এই ছবিতে তাঁকে দেখা যাবে এক রক্তপিপাসু পুলিশ অফিসারের চরিত্রে। ট্রেলার মুক্তির পরই ছবি ঘিরে প্রত্যাশা বেড়েছে। হল মালিকরাও বাড়িয়ে দিচ্ছেন শো সংখ্যা। অনেকের মতে, এটি হতে পারে নানির ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় হিট।
সুরিয়ার রেট্রো স্টাইলের বাজি
তামিল তারকা সুরিয়া ফিরছেন আশির দশকের স্টাইলে নির্মিত ছবি ‘রেট্রো’ নিয়ে।
‘কঙ্গুয়া’ প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় এবার তাঁর জন্য এটা এক ধরনের মরণপণ পরীক্ষা।
তামিলনাড়ুতে ছবিটি ঘিরে উত্তেজনা থাকলেও, অন্যান্য অঞ্চলে সাড়া তুলনামূলক কম।
বলিউডের শেষ ভরসা ‘রেইড ২’
২০১৮ সালের ‘রেইড’ ছিল অজয় দেবগনের এক অপ্রত্যাশিত সাফল্য। এবার তারই সিক্যুয়েল ‘রেইড ২’ মুক্তি পাচ্ছে বড় ক্যানভাসে।
চলতি বছরে বলিউডের পারফরম্যান্স বেশ দুর্বল। তাই অনেকেই বলছেন, ‘রেইড ২’ হিট করলে অন্তত দ্বিতীয় প্রান্তিকটা সামলে নিতে পারবে ইন্ডাস্ট্রি।
একই দিনে তিন ইন্ডাস্ট্রির পরীক্ষা
১ মে ২০২৫ কেবল একটি শুক্রবার নয়—বরং এটি হয়ে উঠতে পারে ভারতীয় সিনেমার নতুন আশার দিন।
এই তিন ছবির সাফল্য প্রমাণ করতে পারে যে, দর্শক এখনো বড় পর্দার প্রতি আগ্রহী। আর এর মাধ্যমেই প্রযোজক, পরিবেশক ও হল মালিকরা ফিরে পেতে পারেন সাহস।
পরিস্থিতি যেভাবে দাঁড়িয়ে আছে, তাতে বলা যায়, সিনেমার ভবিষ্যত এখন অনেকটাই নির্ভর করছে এই একটি দিনের উপর। ১ মে যদি কাজ করে, তবে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে ভারতের সিনেমা জগৎ।
আরএ